বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
প্রথম আলো : কাগজে-কলমে এখনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকে রয়েছে বাংলাদেশ।সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় ছাড়া গতি নেই মাহমুদউল্লাহদের। আজ অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যও জিততেই হবে, এমন এক ম্যাচ এটি।
সাম্প্রতিক ফর্ম নিশ্চিতভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে রাখছে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও টানা দুই ম্যাচে আত্মবিশ্বাস ফেরানো জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। উল্টো অবস্থা বাংলাদেশের। টানা তিন ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। চোট কেড়ে নিয়েছে সাইফউদ্দিন ও দলের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানকে। টিম ম্যানেজমেন্টের অপরিণামদর্শিতায় দলের সঙ্গে বিকল্প খেলোয়াড়ও নেই। আজকের ম্যাচে তাই পরিষ্কার ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকা।
সে ম্যাচের আগে দুই দলের অতীত কী বলে, চলুন একটু দেখে নেওয়া যাক।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
ম্যাচ: ৬টি
বাংলাদেশের জয়: ০
দক্ষিণ আফ্রিকার জয়: ৬
বিশ্বকাপের ম্যাচ: ১
দলীয় সর্বোচ্চ
বাংলাদেশ
১৭৫/৯, ব্লুমফন্টেইন, ২০১৭
দক্ষিণ আফ্রিকা
২২৪/৪, পচেফস্ট্রুম, ২০১৭
দলীয় সর্বনিম্ন
বাংলাদেশ
৯৬, মিরপুর, ২০১৫
দক্ষিণ আফ্রিকা
১৪৮/৪, মিরপুর, ২০১৫
প্রথম দেখা
অবাক বিস্ফোরণ
২০০৭, বিশ্বকাপ
প্রথম বলেই নাজিমউদ্দিনের বিদায়, কিন্তু সেটা শুধু বারুদের স্তূপে আগুন লাগানোর কাজ করেছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই যে ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেট, সেই তত্ত্বের চূড়ান্ত প্রয়োগ দেখিয়ে বাংলাদেশ ৪ ওভারের আগেই ৫০ পেরিয়ে গেল! এর মধ্যেই ফিরে গেছেন তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ আশরাফুল। এর মধ্যে আশরাফুলের ইনিংসটি ছিল বিস্ময়কর। তাঁর ইনিংসটি ছিল এমন—৬, ৪, আউট! আফতাবও ১৪ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে। পাওয়ার প্লেতে ৬৫ রান তোলা বাংলাদেশের ইনিংসের গতি কমান অলক কাপালি (৩৫ বলে ১৪)। ১১তম ওভার ১০০ পেরোনো বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১৪৪ রানে। ৭ উইকেট জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
দ্বিতীয় দেখা
একটুর হতাশা
২০০৮, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ
বৃষ্টি ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে দিয়েছিল। ১৪ ওভারের ম্যাচে আবদুর রাজ্জাকের ১৬ রানে ৪ উইকেটের স্পেল প্রোটিয়াদের ১১৮ রানের বেশি করতে দেয়নি। বৃষ্টি আইনে ১৪ ওভারে ১২২ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১০ বলে ২১ রান করা মোহাম্মদ আশরাফুল ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কেউ পরিস্থিতির দাবি মেটাতে পারেননি। শেষ ৩ ওভারে মাত্র ২৫ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ১২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দেখা
নিজেদের ফাঁদে আটকা
২০১৫, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ
মিরপুরের সে উইকেটে টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং সম্ভব ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি কক, পল ডুমিনি, ডেভিড মিলার, কেউই স্বস্তি পাননি। কিন্তু এক প্রান্তে টিকে ছিলেন ফাফ ডু প্লেসি। তাঁর অপরাজিত ৭৯ রান ১৪৮ রান এনে দিয়েছিল সফরকারীদের। প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন উইকেট বানিয়ে নিজেরাই ধরা পড়েছে বাংলাদেশ। ৯৬ রানে অলআউট হয়ে হেরেছে ৫২ রানে।
চতুর্থ দেখা
আবারও ব্যর্থতা
২০১৫, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ
দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটিই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছিল। মাত্র ৬৩ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়েছেন ডি কক ও ডি ভিলিয়ার্স। প্রোটিয়াদের ১৬৯ তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ অলআউট ১৩৮ রানে। শুধু সৌম্য সরকার ২১ রানে ৩৭ রান করে জয়ের চেষ্টা দেখিয়েছিলেন। ২০ পেরিয়েছেন আর মাত্র একজন। কিন্তু সাতে নামা রনি তালুকদারের ২১ রান এসেছিল ২২ বল থেকে।
পঞ্চম দেখা
ডি ভিলিয়ার্স–ঝড়
২০১৭, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ
আবারও কুইন্টন ডি কক ও এবি ডি ভিলিয়ার্সই বাংলাদেশকে হারালেন। ৪৪ বলে ৫৯ রান করেছিলেন ডি কক। ২৭ বলে ৪৯ করেছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। ৮ ওভারে জুটিতে ৭৯ রান এনে দিয়েছেন দুজন। ১৯৫ তাড়া করতে নেমে ১৭৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সৌম্য। তাঁর ৩১ বলের সে ইনিংসের সঙ্গে উল্লেখ করার মতো রান ছিল শুধু সাইফউদ্দিনের (৩৯ রান)।
ষষ্ঠ দেখা
মিলার–তাণ্ডব
২০১৭, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ
হাশিম আমলাকে নিয়ে ম্যাচের গল্প লেখার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন সবাই। ৫১ বলে ৮৫ রান করে হাশিম আমলা যখন আউট হচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ১৫৭। ইনিংসের বাকি ছিল মাত্র ২১ বল। ২০ ওভার শেষে স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে লেখা ২২৪/৪! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরি (৩৫ বলে) করার পথে সাইফউদ্দিনের করা ১৯তম ওভারে ৩১ রান তুলেছেন ডেভিড মিলার। প্রথম পাঁচ বলে ছক্কা খাওয়া সাইফউদ্দিন শেষ বলে ১ রান দিয়েছিলেন। তাড়া করতে নেমে আগের ম্যাচেরই পুনরাবৃত্তি করেছে বাংলাদেশ। ২৭ বলে ৪৪ রান করেছিলেন সৌম্য। কিন্তু বাদবাকিরা শুধু আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকায় ১৪১ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply